রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ৮ ডিসেম্বর ২০২২:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজে (আইবিএস) আজ বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু অধ্যাপক বক্তৃতামালায় চতুর্থ বক্তৃতা অনুষ্ঠিত হয়। এদিন বেলা ১১টায় ইনস্টিটিউটের সেমিনারকক্ষে ‘প্রফেসর খান সাওয়ার মুরশিদ তরুণ আলোর অঞ্জলি, যুগাবসানে তর্পণ’ শীর্ষক এই বক্তৃতা প্রদান করেন বঙ্গবন্ধু অধ্যাপক সনৎকুমার সাহা।
ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ নাজিমুল হকের সভাপতিত্বে এই বক্তৃতায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার ও বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএস’র সাবেক মহাপরিচালক ড. খান আহমেদ সাঈদ মুরশিদ।
অধ্যাপক সাহা তাঁর বক্তৃতায় বলেন, খান সারওয়ার মুরশিদ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু অধ্যাপনাই করেননি,  এই বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে স্বপ্নও দেখেছেন। বাংলাদেশ চর্চায়, বাংলাদেশ বিষয়ে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণায় উদ্বুদ্ধ করতে তিনি এই ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে এসেছিলেন। তাঁর অন্যতম কীর্তি এই ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজ। দেশ-বিদেশের  অনেক প্রখ্যাত গবেষক, চিন্তাবিদ এই ইনস্টিটিউটে গবেষণাকর্ম সম্পাদন করেছেন।

তিনি আরো বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ মিরারের অন্যতম স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন উপাচার্য খান সারওয়ার মুরশিদ। তৎকালে প্রখ্যাত ভাস্কর মর্তুজা বশীর তাঁর চিন্তার পূর্ণতা দিয়েছিলেন। শহীদ মিনারের পিছনের পোড়া মাটির ম্যূরালটি তিনি খোদাই করেন। কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হককে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপনায় আনার অন্যতম কৃতিত্ব উপাচার্য অধ্যাপক খানের। তাঁর ডাকে সাঁড়া দিয়েই কথাসাহিত্যিক এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন এবং তাঁর কর্মের মাধ্যমে আমাদের সকলকে গৌরবান্বিত করেছেন।

উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই  উপাচার্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তৎকালীন সময়ে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও তিনি অনেক দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন। যার অন্যতম শহীদ মিনার ও  ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজ। আমাদের এই শহীদ মিনার অন্যগুলোর থেকে আলাদা। চার স্তম্ভ বিশিষ্ট এই শহীদ মিনার সংবিধানের চারটি মূলনীতিকে নির্দেশ করে। এছাড়া পাশেই মর্তুজা বশীরের ম্যূরাল মুক্তি সংগ্রামে আমাদের ত্যাগকে স্মরণ করায়। স্বাধীনতার পরপরই তিনি উপাচার্যের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। সেই সময়ই শিক্ষা ও গবেষণায় বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিতে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছিলেন তিনি।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে স্মৃতিচারণ করেন অধ্যাপক খানের পুত্র ড. খান আহমেদ সাঈদ মুরশিদসহ ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মো. আবুল কাশেম ও ইনস্টিটিউট অব ইংলিশ এণ্ড আদার ল্যাংগুয়েজেজের পরিচালক অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন। ইনস্টিটিউটের এমফিল ফেলো নুসরাত সাইদা সুলতানার সঞ্চালনায় এই অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও গবেষক উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, অধ্যাপক খান সারওয়ার মুরশিদ ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য (১৯৭২-১৯৭৪) এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ও সাবেক রাষ্ট্রদূত।

অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডে
প্রশাসক, জনসংযোগ দপ্তর