রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ২ নভেম্বর ২০২৫:
‘শিক্ষকতা পেশা: মিলিত প্রচেষ্টার দীপ্তি’ শীর্ষক প্রতিপাদ্য নিয়ে আজ রবিবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) বিশ্ব শিক্ষক দিবস ২০২৫ পালন করা হয়। এই উপলক্ষ্যে এদিন সকাল ১০টায় এক শোভাযাত্রা সিনেট ভবনের সামনের চত্বর থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে। শোভাযাত্রায় উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যবৃন্দসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, হল ও বিভাগসমূহ থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ নেন।

বেলা ১১টায় সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা, শিক্ষক সম্মাননা ও দিবসটি উপলক্ষ্যে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতার পুরস্কার প্রদান। বিশ্ব শিক্ষক দিবস উদযাপন কমিটির সভাপতি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীনের সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপাচার্য প্রফেসর সালেহ্ হাসান নকীব ও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) প্রফেসর মোহা. ফরিদ উদ্দীন খান উপস্থিত ছিলেন ।

এই আয়োজনে ৩ জন অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর, ড. মু. আয্হার উদ্-দীন (অর্থনীতি বিভাগ, সাবেক উপ-উপাচার্য ও পিএসসি সদস্য), ড. এম নজরুল ইসলাম (পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ) ও ড. মামনুনুল কেরামত (ফলিত পদার্থবিজ্ঞান ও ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ ও সাবেক উপ-উপাচার্য)-কে সম্মাননায় ভূষিত করা হয়। উপাচার্য তাঁদের সম্মাননাসূচক উত্তরীয় ও স্মারক ক্রেস্ট প্রদান করেন।

অনুষ্ঠানে দিবসটি উপলক্ষ্যে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতার পুরস্কারও প্রদান করা হয়।

প্রতিযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ‘টেকসই সমাজ গঠনে শিক্ষকের ভূমিকা’ শীর্ষক বিষয়ে মো. শাহিন বাদশা সুমন (ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগ) প্রথম স্থান, জারিন তাসনীম (ইতিহাস বিভাগ) দ্বিতীয় স্থান ও কাজী এস এম আবদুল্লাহ (মার্কেটিং বিভাগ) তৃতীয় স্থান অধিকার করে। স্কুল পর্যায়ে (৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি) ‘আমার প্রিয় শিক্ষক’ শীর্ষক বিষয়ে আহনাফ তাওসীফ খান (১০ম শ্রেণি, শাখা: খ-১) প্রথম স্থান, ছায়া নুর সাবা (৬ষ্ঠ শ্রেণি, শাখা-ক) দ্বিতীয় স্থান ও মুসবিতুল ইমাম নীরদ (৮ম শ্রেণি, শাখা-খ) তৃতীয় স্থান এবং স্কুল পর্যায়ে (একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি)  মোছা. দিশা খাতুন (শাখা: ব্যবসায় শিক্ষা, দ্বাদশ শ্রেণি) পুরস্কারপ্রাপ্ত হয়।

অনুষ্ঠানে উপাচার্য তাঁর বক্তৃতায় বলেন, শিক্ষকেরা জাতির ভবিষ্যত নির্মাণের কারিগর। তাঁরা যে শিক্ষার্থীদের শিক্ষায় আলোকিত করে তোলেন তারাই আগামী দিনে দেশ ও জাতির নেতৃত্ব দেয়। সভ্যতার শুরু থেকেই শিক্ষাদান ও শিক্ষাগ্রহণ একটি আদান-প্রদানের বিষয় হয়ে আছে। শিক্ষাদান এক মহাযাত্রা। শিক্ষক যত ভালো হবেন ছাত্রও তত ভালো হবে। একজন শিক্ষকই পারেন তাঁর শিক্ষার্থীর মধ্যে জ্ঞান পিপাসা জাগ্রত করতে, শিক্ষার্থীকে জ্ঞান অন্বেষণে উদ্বুদ্ধ করতে। একজন শিক্ষক সর্বদাই শিক্ষক। একজন শিশুর প্রথম শিক্ষক তার মা-বাবা। তারা একজন শিশুকে আগামী দিনের জন্য প্রাথমিকভাবে প্রস্তুত করে। শিক্ষকেরা জ্বলে, শিক্ষার্থীদের মনকে আলোকিত করেন। আদর্শ শিক্ষক হতে হলে শিক্ষকদের হতে হবে দক্ষ, সৎ, নীতিনিষ্ঠ। তাই শিক্ষকতা এক মহান পেশা। এই পেশার স্বীকৃতি দিতে বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত হয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় দিবসটি পালন করে শিক্ষকতা পেশার মর্যাদা সমুন্নত রাখছে।

উপাচার্য আরও বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কৃতবিদ্য শিক্ষকদের সম্মাননা প্রদান করে প্রকারান্তরে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে সম্মানিত করলো। আগামীতেও এই ধারা অক্ষুণ্ন থাকবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

অনুষ্ঠানে সম্মাননাপ্রাপ্ত শিক্ষকবৃন্দ তাঁদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন।

বিশ্ব শিক্ষক দিবস ২০২৫ উদযাপন কমিটির সদস্য-সচিব জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক প্রফেসর মো. আখতার হোসেন মজুমদার অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন।

রাবি শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক প্রফেসর মুর্শিদা ফেরদৌস বিনতে হাবিব অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।

প্রফেসর মো. আখতার হোসেন মজুমদার
প্রশাসক, জনসংযোগ দপ্তর