রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ২৫ মে ২০২৩:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী হিসেবে গড়ে তুলতে আজ এক উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এদিন সকাল ৯:৩০ মিনিটে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে এই কমূসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রাবি উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার। এই আয়োজনে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক কাজী রফিকুল হাসান, রাবি উপ-উপাচার্যদ্বয় অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম ও অধ্যাপক মো. হুমায়ুন কবীর এবং রাজশাহী চেম্বারের সভাপতি মাসুদুর রহমান রিংকু। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন ড. মো. মাসুদুর রহমান। অনুষ্ঠানে এসএমই এর মহাব্যবস্থাপক নাজিম হাসান সাত্তার স্বাগত বক্তব্য রাখেন। এছাড়া রাবি ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং এন্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের সহকারী পরিচালক মো. ইমরান হোসেন অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর  ÔHow to become a successful entrepreneur’ ও  ‘Sources of capital fund for new business and startups’ শীর্ষক দুটি প্লিনারি সেশন অনুষ্ঠিত হয়। এসব প্লিনারি সেশনে দেশের খ্যাতনামা ব্যাংকের নির্বাহী, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের কর্মকর্তা ও উদ্যোক্তা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
দিনব্যাপী এই কর্মসূচিতে প্রায় ৩০০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। রাবির ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং এন্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের তত্ত্বাবধানে শিল্প মন্ত্রণালয়ের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ফাউন্ডেশন এই কর্মসূচির আয়োজন করে।
কর্মসূচি উদ্বোধন করে উপাচার্য তাঁর বক্তব্যে বলেন, উদ্যোক্তা তৈরির ক্ষেত্রে রাজশাহী অত্যন্ত সম্ভাবনাময় স্থান। এখানে রয়েছে তিনটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ অনেকগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিসহ ব্যবসায় শিক্ষার বিভিন্ন ধারায় শিক্ষা, গবেষণা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। বিশ্বায়নের এই যুগে জ্ঞান, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা ভৌত পুজির স্থান দখল করেছে। ফলে আজ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবসার ক্রমে প্রসার ঘটছে। আজ শ্রমভিত্তিক অর্থনীতি থেকে বুদ্ধিবৃত্তিক অর্থনীতির দিকে বিশ্ব ক্রমে এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বে এখন চলছে গবেষণার ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর উদ্ভাবনের সুযোগ। এমনই বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের তরুণ সমাজও উদ্যোক্তা হতে ও তাদের উদ্ভাবনী জ্ঞান ও দক্ষতাকে জাতীয় উন্নয়নে কাজে লাগাতে এগিয়ে আসছে যা আমাদের জন্য অত্যন্ত আশাবাদের বিষয়।
দেশের বর্তমান সরকার দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরে নিরন্তরভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন প্রযুক্তি নির্ভর সেবাকে মানুষের দৌড়গোড়ায় নিয়ে যাওয়া ও বিভিন্ন কাজে সে প্রযুক্তির ব্যবহার ব্যাপক বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলার ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তরুণদের ভূমিকার প্রতি জোর দিয়ে তাদের ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যক্তা হিসেবে উদ্বুদ্ধ হতে বলেন তিনি। বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার উন্নয়নের চিন্তা ধারণ ও তা  চর্চার জন্য তরুণদের প্রতি আহ্বান জানান।
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, আমাদের দেশে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা শেষে কি করবেন ভেবে হতাশ হয়ে পড়েন। এই উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচি শিক্ষার্থীদের হতাশা দূর করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। উদ্যোক্তা হবার বিষয়গুলো বিশেষ করে অর্থায়নের বিষয় সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরার ব্যাপারে এই অনুষ্ঠানের আয়োজকদের প্রতিও তিনি আহŸান জানান। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা তথা শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এইধরনের আয়োজনের ভূমিকাকে জোর দিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা হিসাবে উদ্বুদ্ধ হতে আহ্বান জানান। উপ-উপাচার্য আরো বলেন, ব্যবসায় নৈতিকতার অভাবের বিষয়টি তুলে ধরে আজকের তরুণরা সফল উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলেও নৈতিকতা যেন তাদের মধ্যে বহাল থাকে সে বিষয়ে জোর দেন তিনি।

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, এসএমই দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তারা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা তৈরির মাধ্যমে জনগোষ্ঠীর এক বিরাট অংশকে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্যের পরিচয় দিয়েছে। ইতিমধ্যেই তরুণরা দেশে বিদেশে কর্মক্ষেত্রে তাদের উদ্ভাবনী দক্ষতা ও সৃজনশীলতার স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হয়েছে। ১৭ কোটি মানুষের দেশে সকলের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা বেশ দূরুহ। সরকারের গৃহিত নীতি ও পদক্ষেপের মাধ্যমে কৃষি ক্ষেত্রে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য এসেছে। আজকের এই সচেতনতামূলক কর্মসূচি আমাদের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনা সৃষ্টি ও উদ্যোক্তা হতে উদ্বুদ্ধ করতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডে
প্রশাসক, জনসংযোগ দপ্তর