রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ১৭ মে ২০২৪:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) আজ শুক্রবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী  শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালন করা হয়। এই উপলক্ষে সকাল ৯:৪৫ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম ও উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মো. হুমায়ুন কবীরসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণসহ মোনাজাত করেন। পুষ্পস্তবক অর্পণকালে অন্যদের মধ্যে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. অবায়দুর রহমান প্রামানিক, বিভিন্ন অনুষদের অধিকর্তাবৃন্দ, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মো. তারিকুল হাসান, প্রক্টর অধ্যাপক মো. আসাবুল হক, ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক মো. জাহাঙ্গীর আলম সাউদ, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রণব কুমার পান্ডে, হল প্রাধ্যক্ষবৃন্দ, বিভিন্ন বিভাগের সভাপতিসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে সকাল ৯:৪৫ মিনিটে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবন চত্বর থেকে এক আনন্দ শোভাযাত্রা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে যায়।

এদিন সকাল ১০:১৫ মিনিটে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। এই আয়োজনে আলোচক ছিলেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধিকর্তা অধ্যাপক এস এম এক্রাম উল্যাহ। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মো. হুমায়ুন কবীর। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম ও বিশেষ অতিথি ছিলেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. অবায়দুর রহমান প্রামানিক। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মো. তারিকুল হাসান।

সভায় আলোচক অধ্যাপক এস এম এক্রাম উল্যাহ বলেন, বাঙালি জাতীয়তাবাদ সার্বজনীন, বস্তুনিষ্ঠ এবং যুক্তি নির্ভর। বাঙালি জাতীয়তাবাদী দর্শন অসাম্প্রদায়িক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণমুখী, প্রগতিবাদী ও মানবতাবাদী। আর শেখ হাসিনা ব্যতিত বর্তমান বাংলাদেশে এই জাতীয়তাবাদ চেতনাকে ধরে রাখা সম্ভব নয়। কারণ তিনি আমাদের অনুভবে, চিন্তায়, চেতনায় ও আদর্শে  আছেন। বাঙালি জাতি অর্থাৎ দেশপ্রেমী জনগণকে একত্রিত করা ও দেশকে রক্ষা করার জন্য এবং মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য ১৯৮১ সালের ১৭ মে তার প্রত্যাবর্তন অত্যন্ত জরুরি ছিল। প্রত্যাবর্তনের শুরু থেকেই তিনি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার শক্তিশালী অ্যাডভোকেট হিসেবে কাজ করে চলেছেন। তিনি গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই ও সংগ্রাম করে চলেছেন।

বঙ্গবন্ধু যেমন দেশের মানুষের মুক্তির জন্য নিজেকে উৎসর্গ করে গেছেন তেমনি বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশের মানুষের ভাত এবং ভোটের অধিকার আদায়ে আজীবন সংগ্রাম করে চলেছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।

প্রধান অতিথি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সুলতান-উল- ইসলাম বলেন, স্বৈরাচারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে জননেত্রী শেখ হাসিনার এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে আমরা বাংলাদেশের মানুষ ও বাঙালির পুনঃশৃঙ্খলামুক্ত ও পুনঃস্বাধীন হবার উষালগ্নের সাথে তুলনা করতে পারি। সেদিন তিনি সমগ্র বাঙালি জাতির আশা-ভরসা- আস্থার সোনালী সূর্যে পরিণত হয়েছিলেন যা আজও অব্যাহত রয়েছে। দেশে গণতন্ত্র কায়েম হয়েছে, গণমানুষের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তার দুরদর্শী ও বলিষ্ট নেতৃত্বে জাতির পিতার আজন্ম স্বপ্নক্ষুধা, দারিদ্র ও বৈষম্যমুক্ত স্বাবলম্বী সোনার বাংলার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হচ্ছে, দুখি বাঙালির মুখে হাসি ফুটেছে। বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে।

তিনি আরো বলেন, মাননীয় প্রধানমস্ত্রী হচ্ছেন বাঙালির তথা মানবতার জননী, বাঙালির বিপুল প্রত্যাশার বাতিঘর, মেহনতি মানুষের আস্থার প্রতিক এবং উদার, গণতান্ত্রিক, মানবিক ও অসাম্প্রদায়িক উন্নত বাংলাদেশ গড়ার কারিগর। বঙ্গবন্ধু ও বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাঙালি জাতিকে বিশ্ব দরবারে যে মর্যাদায় আসীন করেছিলেন শেখ হাসিনা তা আরো অধিক উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। জাতি হিসেবে আমরা গর্বিত, তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ ও চিরঋণী।

সভাপতির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক হুমায়ুন কবীর বলেন, আজকে আমাদের কৃষি বিপ্লবের ফলে কোনো মানুষ না খেয়ে আছে এমনটা কেউ বলতে পারবে না। আসলে বাংলাদেশের মতো ছোট্ট একটি দেশে ১৮ কোটি মানুষের তিন বেলা খাবার, সামাজিক নিরাপত্তা, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ সবকিছু নিশ্চিত করা চ্যালেঞ্জের বিষয়। কিন্তু বর্তমান বিশ্বের বিরূপ পরিস্থিতিতেও শেখ হাসিনা এসব নিশ্চিত করেছেন।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা, প্রক্টর অধ্যাপক মো. আসাবুল হক, ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক মো. জাহাঙ্গীর আলম সাউদ, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রণব কুমার পান্ডেসহ শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।

অধ্যাপক প্রণব কুমার পান্ডে, পিএইচডি
প্রশাসক, জনসংযোগ দপ্তর