রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪:
নেচে, গেয়ে, আবির মেখে আর বর্ণিল সাজে সেজে বসন্তকে বরণ করে নিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। ষড়ঋতুর এই শেষ ঋতুকে বরণ করতে পুরো ক্যাম্পাস জুড়ে সৃষ্টি হয়েছিল প্রাণবন্ত উৎসব। ঋতুরাজ বসন্তের আগমনী বার্তাকে সবার মাঝে পৌঁছে দিতে এদিন চারুকলা অনুষদ আয়োজন করে ‘বসন্ত উৎসব-১৪৩০’।
উৎসবটি পালন উপলক্ষে আজ বেলা ১টায় চাকরুলা চত্বরে আয়োজন করা হয় বসন্ত উৎসবের আলোচনা সভা। অনুষদের অধিকর্তা অধ্যাপক মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে এই আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম ও উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মো. হুমায়ুন কবীর।
আলোচনা সভায় উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, বসন্তের উৎসব বাঙালির উৎসব। বাঙালির আবহমান ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক চর্চা চারুকলা অনুষদ আজও পালন করছে। এই ঐতিহ্য তারা আগামীতেও বজায় রাখবে বলে তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, বাঙালির এই আয়োজন বছর বছর পালিত হচ্ছে। চারুকলা অনুষদ উৎসবটিতে যে বিশেষ আয়োজন করে থাকে সেটা প্রশংসার দাবীদার। উৎসবটি পালনের মধ্য দিয়ে বাঙালিয়ানার এক ব্যতিক্রমী ঐতিহ্য ফুটে উঠে। ব্যতিক্রমী এই আয়োজনের সার্বিক সাফল্য কামনা করেন তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, এসময় নতুন ফুল আসে। পলাশ, গোলাপ, গাদা ফুল ফোটে। ষড় ঋতুর বৈচিত্র্যকে আমরা আগে অনুধাবন করতাম। কিন্তু অনেক ঋতুই এখন হারিয়ে গেছে বলে মনে হচ্ছে। তার মধ্যেও ফাগুন মানেই আমাদের সহ¯্র বছরের সংস্কৃতির অংশ। এটাই বসন্ত। বাঙালিরা এই উৎসবটিকে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করে। এই উৎসবের মূল বার্তা হলো এ অঞ্চলের মানুষ একটি নির্দিষ্ট সংস্কৃতির আবহে যুক্ত। আমাদের ভাষা, ধর্ম, লোকায়িত ঐতিহ্য মিলেই আমাদের সংস্কৃতি। জাতীয়তাবাদের বিষয়টিও আমাদের সংস্কৃতিজাত। সংস্কৃতি মানুষকে মানুষের কাছে টানে। কবি চন্ডীদাসের কথা তিনি বলেন, ‘শুনহে মানুষ ভাই, সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই’। উপাচার্য আরো বলেন, আমাদের মূলধারার সবধর্মেই সৃষ্টির মাঝে স্রষ্টাকে খুঁজে পাই। একারণেই আমরা যেন বাঙালিয়ানার ঐতিহ্য হারিয়ে না ফেলি সে বিষয়ে সবার দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানান উপাচার্য। তিনি আরো বলেন, আমরা যেন প্রতিদিনই বসন্ত অনুভব করি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সাম্যবাদী সমাজের যে চিন্তা করে গিয়েছিলেন এসব ঐতিহ্য বজায় রাখার মাধ্যমে আমরা যেন সেটা ধরে রাখতে পারি।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন গ্রাফিক ডিজাইন, কারুশিল্প ও শিল্পকলার বিভাগের অধ্যাপক এ এইচ এম তাহমিদুর রহমান।
আলোচনা সভায় চারুকলা অনুষদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভার শেষে চারুকলা অনুষদের আয়োজনে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে।
অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডে
প্রশাসক, জনসংযোগ দপ্তর