Message from Principal

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশুদের মাতৃস্নেহে আনন্দের সাথে শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যে ১৯৮৬ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় নার্সারী স্কুল নামে একটি স্কুল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় মহিলা ক্লাব ভবনের  অভ্যন্তরে প্রতিষ্ঠিত হয়। সমাজকর্ম বিভাগের প্রফেসর বেগম হোসনে আরা সহ মহিলা ক্লাবের বেশ কিছু সদস্যের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে তৎকালীন মহিলা ক্লাবের সভানেত্রী মিসেস হাসিনা রকিবের সদিচ্ছায় ২০ জন শিক্ষার্থী ও ৪ জন শিক্ষক নিয়ে ৯ মার্চ ১৯৮৬ সালে স্কুলটি সম্পূর্ণ সেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে আনুষ্ঠানিকভাবে পথচলা শুরু করে।

স্কুলের শুরুতে অধ্যক্ষ হিসেবে বেগম রাশেদা খালেক এবং শিক্ষক হিসেবে মিসেস সালমা জুবেরী, মিসেস নাজিয়া শিবলী এবং মিসেস সেলিনা হোসেনকে নিয়োগ দেয়া হয়। মহিলা ক্লাব প্রতিষ্ঠিত এই নার্সারী স্কুলটি অল্প কিছুদিনের মধ্যে এতোই সুনাম অর্জন করে যে মহিলা ক্লাব ভবনে সংকুলান সম্ভব হয় না। ক্লাব সদস্য ও অভিভাবকগণের দাবীর পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯০ সালে তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন টিনসেড ভবনের একদিকের অংশে এটি পরিচালনার সিন্ধান্ত দেন। স্কুলটি টিনসেড ভবনে পরিচালনার ফলে শিক্ষার্থী সংখ্যা যেমন বৃদ্ধি পেতে থাকে তেমন শিক্ষক সংখ্যাও বৃদ্ধি পায়।

প্রয়োজনের পরিপ্রেক্ষিতে পর্যায়ক্রমে মিসেস সেকেন্দ্রা মাহবুব, মিসেস দীপিকা মজুমদার, মিসেস কামরুন রহমান, মিসেস শরীফা খাতুন, মিসেস মোমেনা জীনাত, মিসেস লায়লা আরজুমান্দ বানু, মিসেস সুমিতা মিত্র, মিসেস নূরুন নাহার খান, মিসেস মনোয়ারা রহমান ও মিসেস কামরুন্নেছা লেখা ১৯৯৯ সালের মধ্যে স্কুলে যোগদান করেন। ০৬-১২-১৯৯৭ সালে পরিচালনা পরিষদে সর্বসম্মতিক্রমে স্কুলটির নাম আংশিক সংযোজন করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় নার্সারী ও জুুনিয়র স্কুল রাখা হয়। সময়ের ধারাবাহিকতায় স্কুলে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক বৃদ্ধির সাথে সাথে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্লাসরুম এবং আনুষঙ্গিক সকল দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন সকল সময়েই।

সরকারী নীতির কারণে স্কুলের প্রয়োজনীয় নিজস্ব জমি, ভবন, প্রভৃতি না থাকায় ২০০৯ সালে বিনামূল্যে সরকারী বই প্রাপ্তি, সমাপনী পরীক্ষা দেয়ার অনুমতি ইত্যাদি বিষয়ে সমস্যা কোনভাবে সমাধান করতে না পারায় স্কুলের পরিচালনা পরিষদ ১৪-১১-২০১০ তারিখে স্কুলটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অন্তর্র্ভূক্ত করার আবেদন করে। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সমস্যা নিরসনের উপায় খুঁজতে থাকেন।

০৮-০৫-২০১৩ তারিখে স্কুলের শিক্ষকবৃন্দ স্কুলের নাম পরিবর্তন করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রাক প্রাথমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয় স্কুলটিকে আই.ই.আর এ আত্মীকরণের জন্য পুনরায় মাননীয় উপাচার্যের নিকট আবেদন করেন যার পরিপ্রেক্ষিতে ২৩/২৪,১২/২০১৩ তারিখের ৪৫০ তম সিন্ডিকেট সভায় স্কুলটি ১৬জন শিক্ষক ও ৫জন কর্মচারী দিয়ে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ডেমন্সট্রেশন ইউনিট-২ হিসেবে আত্মীকৃত হয়।
স্কুলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে স্কুলের নাম ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রাক প্রাথমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়’ করা হলেও কার্যক্ষেত্রে এই নামের সীমাবদ্ধতা থাকায় ০৩-০৯-২০১৪ তারিখের ৪৫৪তম সিন্ডিকেট সভায় পূর্বের নাম পরিবর্তন করে শেখ রাসেল মডেল স্কুল, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদিত হয়।

১৯৮৬ সালে যখন এই স্কুলটির কার্যক্রম শুরু হয় তখন সেবামূলক মনোভাবকে প্রাধান্য দেয়া হয়। শুধুমাত্র পড়ালেখা নয় সকল মানবিক গুনসম্পন্ন মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবে সকলে স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে গেছেন। শিক্ষার্থীদের বেতনের টাকায় তাদের বিভিন্ন সুবিধাদি দেয়া হয়েছে। এরকম একটি স্কুল যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভূক্ত হয় তখন প্রথমেই মনে পড়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেল এর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন ও স্কুলের শিশু শিক্ষর্থীদের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দিয়ে সকল মানবিক গুনাবলী সম্বলিত সৎ এবং সফল মানুষ গড়ার কথা চিন্তা করে  এই স্কুলটির নাম ‘শেখ রাসেল মডেল স্কুল, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়’ হওয়াই বাঞ্ছনীয়।

১০-০৯-২০১৪ তারিখে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী শেখ রাসেল মডেল স্কুলের জন্য নতুন বিল্ডিং এর ভিত্তিফলক উন্মোচন করেন। সরকারের পক্ষ থেকে শেখ রাসেল মডেল স্কুলে সুইমিং পুল সহ নতুন বিল্ডিং তৈরির জন্য একনেক কর্তৃক ২২-১২-২০১৬ তারিখে ১৭২৫.৩১ লক্ষ টাকা অনুমোদন করা হয়। আশা করা হচ্ছে অচিরেই  শেখ রাসেল মডেল স্কুলের নতুন বিল্ডিং এর কার্যক্রম শুরু হবে।

আদর্শ কথা– শিক্ষার জন্য এসো
সত্য সুন্দর জীবন গড়ো।

শপথ বাক্য- আমি শপথ করছি যে, সদা সত্য কথা বলবো।
স্রষ্ঠার সকল সৃষ্টিকে ভালবাসবো।
দেশকে ভালবাসবো। ন্যায়ের পথে থাকবো।
বিদ্যালয়েয়ের সকল নিয়ম-কানুন মেনে চলবো।

হে প্রভূ আমাকে শক্তি দিন,
আমি যেন একজন ভাল মানুষ হতে পারি
এবং দেশ ও দশের সেবা করতে পারি।

মোসা: লিসাইয়া মেহ্জবীন